প্রখ্যাত ভাস্কর-মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী-এর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আজ ৬ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার এক শোকবাণীতে উপাচার্য বলেন, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ভাস্কর ছিলেন। শিল্পচর্চায় তিনি নতুন ধারার সন্ধান দেন। ভাস্কর্য শিল্পে তার কাঠের কাজ খুবই দৃষ্টিগ্রাহ্য। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন সৃষ্টিশীল মানুষকে হারালো। সর্বোপরি তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশমাতৃকার প্রতি তাঁর ত্যাগ জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের আমরা সকলে গভীরভাবে শোকাহত।
উপাচার্য বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী ১৯৪৭ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুলনার পাইওনিয়ার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং খুলনা গার্লস স্কুল থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। মাঝে কিছুদিন স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি ইউএনডিপি, ইউএনআইসিইএফ, এফএও, কানাডিয়ান দূতাবাস প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। শেষ বয়সে এসে নানা শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেন এবং তা অবিরামভাবে অব্যাহত রাখেন। শিল্পকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি ২০১০ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার” হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” লাভ করেন। এছাড়াও তিনি হিরো বাই দ্য রিডার ডাইজেস্ট ম্যাগাজিন (ডিসেম্বর ২০০৪); চাদেরনাথ পদক; অনন্য শীর্ষ পদক; রৌপ্য জয়ন্তী পুরস্কার (ওয়াইডবিøউসিএ); মানবাধিকার সংস্থা কর্তৃক মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী আজ ৬ মার্চ ২০১৮ মঙ্গলবার রাজধানীর এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে, তিন মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী ৮ মার্চ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত প্রিয়ভাষিণীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। ওইদিন বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদুল জামিয়ায় তাঁর নামাজে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।